বরগুনায় সুদের ব্যবসায়ীকে সালাম না দেওয়ায় অসহায় দিনমজুরকে নির্যাতন

0
11

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনা সদর উপজেলার চর মাইঠা গ্রামের অসহায় দিনমজুর আ. কুদ্দুস ও তার ছেলে রাকিব কে শারীরিক নির্যাতন করেছেন স্থানীয় সাজিপাড়া গ্রামের বাবুল হাওলাদার ও তার ছেলেরা। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, দিনমজুর আব্দুল কুদ্দুসের বাবুল হাওলাদারকে ছালাম না দেয়ায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পূর্ব মুহূর্তে কুদ্দুস কে চড় থাপ্পড় দেয় বাবুল। স্থানীয় লোকজন কুদ্দুস কে ছাড়িয়ে দিলে সে বাড়ি চলে যায়। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাবুল হাওলাদারের ছেলে শাকিল কুদ্দুসের ছেলে রাকিব কে ধরে নিয়ে যায় তাদের নিজ বাড়িতে। সেখানে রাকিবের উপর তারা শারীরিক নির্যাতন চালায়। শাকিল এর বাবা ও মা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাতাব হোসেন কে জানালে তিনি খাকবুনিয়া বাজারের দোকানদার গোলাম সরোয়ার ও কুদ্দুসের ভাই ইদ্রিসকে বাবুলের বাড়িতে পাঠান। বাবুল ও তার ছেলেরা রাকিবকে ছাড়ার জন্য রাকিবের বাবা কুদ্দুসকে ক্ষমা চাওয়ার শর্ত দেন। রাত বারোটার দিকে সরোয়ার ও ইদ্রিস কে সাথে নিয়ে কুদ্দুস বাবুল হাওলাদারের বাড়িতে গেলে বাবুল ও তার দুই ছেলে কুদ্দুস কে নির্মমভাবে মারধর করে। রাত পৌনে দুইটার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় কুদ্দুস ও তার ছেলে রাকিব কে মুক্ত করে নিয়ে আসেন সরোয়ার ও ইদ্রিস। এ বিষয়ে মামলা করলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন বাবুল হাওলাদার ও তার ছেলেরা। বাবুল এর কাছে মার খেয়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না অসহায় দিনমজুর পরিবারটি। ঘটনা সংবাদ শুনে সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তিদের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের।স্থানীয় ব্যক্তিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বাবুল হাওলাদার সুদের ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ায় এলাকার কাউকে তোয়াক্কা করেন না। তারা বাবুলের কঠিন বিচার দাবি করছেন। ৯ নং এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাতাব হোসেন বলেন, “বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বাবুল হাওলাদার কুদ্দুস কে মারার পরে তার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। আমাকে বিষয়টি জানালে আমি বাবুল হাওলাদার কে ফোনে ছেলেটিকে ছেড়ে দিতে বলি, এরপরেও ছেলেটিকে না ছাড়ায় আমি বাবুলের ভায়রা উজ্জল মাস্টার কে ফোন দিয়ে তার কথা মত সরোয়ার ও ইদ্রিসকে পাঠাই। তার পরেও বাবুল ও তার ছেলেরা সরোয়ার ও ইদ্রিস এর সামনে অসহায় প্রতিবন্ধী কুদ্দুস কে মারধর করেছে।” খাকবুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী গোলাম সরোয়ার বলেন, “কুদ্দুস কোনো অপরাধ করেনি, তার পরেও বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমরা অনেক বুঝিয়ে কুদ্দুস কে বাবুলের বাড়িতে নিয়ে যাই। আমি কুদ্দুসকে ক্ষমা চাইতে বললেন কুদ্দুস মাথা নিচু করে বাবুলের কাছে ক্ষমা চাইতে গেলে আমাদের সামনেই বাবুল ও তার দুই ছেলে কুদ্দুসের উপর আক্রমণ চালায়।” অসহায় আব্দুল কুদ্দুস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি দিনমজুর মানুষের বাড়ি কাজ করে খাই তাই যখন খুশি যে কেউ আমারে মারবে? এর কি কোন বিচার পাব না।” অভিযুক্ত বাবুল হাওলাদার বলেন, “আমি কুদ্দুসের অনেক উপকার করেছি। ঘটনার দিন কুদ্দুস আমার পাশ থেকে যাওয়ার সময় আমাকে সালাম না দেওয়ায় আমি তাকে হাত ইশারায় ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি আমি এত উপকার করার পরেও আমার সাথে কেন এরূপ আচরণ করা হয়েছে। এরপর আমি তার দুই গালে হাত দিয়ে একটু মশকরা করেছি। এতে কুদ্দুস আমার উপর ক্ষেপে ক্ষেপে গিয়ে আমাকে চড় দিয়েছে। আমি ছেড়ে দেওয়ার পর আমার ছেলে ওর ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে তবে মারধর করা হয়নি। রাতে কুদ্দুসকে মারা হয়নি, শুধু আমি ঘাড় ধরে তাকে আমার পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলেছি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here