ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে বিষখালী নদী থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কেটে উত্তোলনের অপরাধে এক ব্যক্তিকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার ৫ জানুয়ারি বিকালে উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশকাহনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রামামাণ আদালতের বিচারক অনুজা মণ্ডল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এ দণ্ড প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন বড়ইয়া ইউনিয়নের উত্তমপুর গ্রামের মোঃ এখলাস উদ্দিনের পুত্র মোঃ জাকির হোসেন। রাজাপুর উপজেলায় কোথাও বালুমহল কিংবা অস্থায়ী ইজারা নেই।
বালু উত্তোলন নিষেধ থাকলেও একশ্রেণির অসাধু বালু ব্যবসায়ী বছরের পর বছর সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এই নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবাধে এ বালু উত্তোলন করছেন এবং উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে রেখে তা বিক্রি করছেন। নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন রাত ১০টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত রাতের আঁধারে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দিনের আলোতেই বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন পাড় থেকে চুরি করা হচ্ছে মাটি। চুরি করা এই মাটি বিক্রয় করা হচ্ছে ইটভাটাসহ বিভিন্ন এলাকার ক্রেতাদের নিকট। প্রতি দিন ও রাতে কয়েক লাখ টাকার মাটি ও বালু উত্তোলন করে বছরে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি চুরি চক্রের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের কেউ কেউ প্রতিদিন চুক্তি ভিত্তিতে ভাগ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। কখনো কখনো সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বলে পার পেয়ে যাচ্ছে অবৈধভাবে উত্তোলন করা ব্যবসায়ীরা।
বিভিন্ন সময়ে জব্দকৃত ড্রেজার, বলগেট আইন অনুযায়ী ধ্বংস না করে উপজেলা প্রশাসনের অসাধু লোকজনের সহায়তায় গোপনে নিলাম দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। একই অপরাধ বারবার সংঘটিত করলেও তা আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ না নিয়ে তথ্য গোপন থাকার কারণে সাধারণ অপরাধের আওতাভুক্ত করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বিচার করা হয়। আর এ কারণেই অপরাধের পুনরাবৃত্তি দিন দিন বাড়ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক অনুজা মন্ডল মুঠো ফোনে জানান মুচলেকা রেখে জরিমানা করা হয়েছে। ২য় বারে এ রকম অপরাধ সংঘটিত হলে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুশিঁয়ারি করা হয় ঐ অপরাধীকে। প্রতিবেশ ও পরিবেশ সুরক্ষায় অবৈধভাবে মাটি বা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে মর্মেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।