শিবচরে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধু কে কীটনাশক খাইয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা মাদারীপুরের শিবচরে যৌতুকের জন্য শান্তা আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধুকে শুশুর বাড়ির লোকজন কর্তৃক নৃশংসভাবে নির্যাতন ও বিষাক্ত কীটনাশক খাইয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৪ই আগস্ট শুক্রবার শিবচর থানার মির্জারচর গ্রামে নৃশংস এ হত্যাকান্ড ঘটে ।এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ৫জন কে আসামী করে মাদারীপুর বিজ্ঞ আদালতে একটি নির্যাতন ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আসামীরা হলো, নিহতের স্বামী ইমারাত হাওলাদার (৩০), দেবর বাবু হাওলাদার (২৭), ননদ ঝুমুর আক্তার (২২), শশুড় দেলোয়ার হাওলাদার (৫৫), শাশুড়ী মজি বেগম (৪৭)। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, গত চার বছর পূর্বে মির্জারচর গ্রামের দেলোয়ার হাওলাদের ছেলে ইমারাত হাওলাদারের সাথে বিরাঙ্গল গ্রামের সাগর সরদারের মেয়ে শান্তা আক্তারের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য শান্তা আক্তার কে নানা রকম ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে কয়েকবার বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে শশুড় বাড়ির লোকজন কে দেয়। তারপর ও ক্ষান্ত হয়নি তার শশুড় বাড়ির লোকজন। আরো যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতন করতে থাকে। এ নিয়ে কয়েকবার সামাজিক শালিশ বৈঠক হয়। কিন্তু এরপর ও থেমে থাকেনি তার শশুড় বাড়ির লোকজন। তারা যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়ত শান্তা আক্তার কে নৃশংস ভাবে মারধর ও নির্যাতন করতে থাকে। দিন দিন এ নির্যাতনের মাত্রা বাড়তেই থাকে। গত ১৪/০৮/২০২০ তারিখ সকাল ৯ টায় শান্তা আক্তার তার বাবার বাড়িতে ফোন দিয়ে জানায়, আজকের মধ্যে যৌতুকের টাকা না পাঠালে আমাকে তারা মেরে ফেলবে। এ খবর শুনে নিহতের ভাই বেলাল সেখানে যায় সন্ধা আনুমানিক ৭ টায় সে আসামীপক্ষ কে মারধর করার কারন জানতে চাইলে, নিহতের শাশুড়ী বলে আজ যৌতুক না পেলে শান্তা কে মেরেই ফেলবে। এসময় বেলাল তার বোন কে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে আসামী বাবু হাওলাদার রাম দা নিয়ে নিহতের ভাই বেলাল হোসেন এর গলায় ধরে। এরপর বাকী আসামীরা তার সামনেই তার বোনকে ধরে পাজো কোলো করে মাটিতে শুইয়ে দেয় ও মাথা জোর পূর্বক মাটিতে চেপে ধরে রাখে। তারপর ঘর থেকে বিষাক্ত কীটনাশক নিয়ে জোরপূর্বক তাকে খাওয়ানো হয়। এসময় শান্তা আক্তার জোরে চিৎকার করতে চাইলে তার গলাচেপে ধরা হয়, ও আরো কীটনাশক সেবন করানো হয়। এতে কিছুক্ষণ পর সে নিস্তেজ হয়ে পরে। উপস্থিত নিহতের ভাই তাড়াতাড়ি তার বাড়ির লোকজনকে ফোনের মাধ্যমে খবর দেয়। তারা এসে অচেতন অবস্থায় শান্তা কে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার্ড করে। ফরিদপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে। এরপর লাশ দাফন করে থানায় মামলা করতে গেলে আসামী পক্ষের লোকজন বাদীদের কে মামলা না করতে প্রান নাশের হুমকী ও বাধা প্রদান করে৷ এরপর তারা মাদারীপুর বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করে। এবিষয়ে নিহতের বাবা বলেন, যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে তার শশুর বাড়ির লোকজন আমার ছেলের সামনেই বিষ খাইয়ে হত্যা করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি আসামীদের অতিদ্রুত ফাসি চাই। যাতে যৌতুকের জন্য আর কোন মেয়ে কে জীবন দিতে না হয়। আরো জানাযায় নিহতের আড়াই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।