পিরোজপুর প্রতিনিধি:
বিস্তারিত :পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ ধানীসাফা গ্রামে শুক্রবার দুপুরে ভাড়া ঘর থেকে গৃহকর্তা অটো চালক মোঃ আয়নাল হক হাওলাদার (৩৫), তার স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাদের ৩ বছরের কণ্যা শিশু আশফিয়া ইসলামের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। আয়নাল হক একই গ্রামের মৃত রতন হাওলাদারের ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়ণা তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠিয়েছে। খুকু মনি বাড়িতে বসে গ্রামের মহিলাদের অর্ডারি জামা-কাপড় বানাত।
দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে ঘরের উত্তর পাশে সিঁদ কেটে ঘরে প্রবেশ করে তাদের হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় বলে ধারনা করা হচ্ছে। আয়নাল ও খুক মনির হাত পেছন দিকে গামছা দিয়ে হাত-পা বাধাঁ ছিল। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহত অটোচালক আয়নাল হকের আপন বড় ভাই হেলাল হাওলাদার(৮০), প্রতিবেশী চাচা মালেক হাওলাদার(৫২), চাচাত ভাই বেল্লাল হাওলাদার(৪৫) ও একই গ্রামের মাহবুব হাওলাদার(১৮)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে ।
এ তিন খুনের ঘটনার তদন্তে আইন শৃংখলাবাহিনীর সিআইডি এর ছয় সদস্য , পিবিআই এর নয় সদস্য ,র্যাব ও ডিবির একদল গোয়েন্দা হত্যার রহস্য উদঘাটনে ঘটনাস্থলে পরিদর্শণ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, অটোচালক মোঃ আয়নাল হক হাওলাদার ৫ মাস থেকে নিজ বাড়ি থেকে অদুরে ধানীসাফা গ্রামে মোঃ মোজাম্মেল হাওলাদারের একটি খুপরি ঘরে ভাড়া স্ত্রী খুকু মণি ও কণ্যা আসফিয়াকে নিয়ে বসবাস করতো। বৃহস্পতিবার আয়নাল স্ত্রী-কণ্যাসহ রাতের আহার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। দুর্বৃত্তরা সিদ কেটে ঘরে প্রবেশ কওে ৩ জনকে হত্যা কওে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে ঘরের মালামাল তছনছ করে পালিয়ে যায়।
আয়নালের চাচাত ভাই মোঃ জালাল হাওলাদার জানান শুক্রবার সকালে তার মেয়ে মহিমা খাতুন(১৫) খুকুমনির কাছে বানাতে দেয়া জামা আনতে গিয়ে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরোজায় ধাক্কা দিলে দরোজা খুলে যায়। এসময়ে ৩ জনের লাশ ঝুলতে দেখে সে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে। পইে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিবারের তিনজনের লাষ উদ্ধার করে ময়ণাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়।
বাড়ির মালিক মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, আয়নাল অটো চালিয়ে এবং তার স্ত্রী দর্জি কাজ করে সংসার চালাত। তাদের কোন শত্রু আছে বলে তার জানানাই।
মঠবাড়িয়া অফিসার ইনচার্জ আ জ ম মাসুদুজ্জামান মিলু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের তিনজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এটি কোনো আত্মহত্যার ঘটনা নয়। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড । হত্যার রহস্য উদঘাটনে চারটি গোয়েন্দা সংস্থা কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের এর প্রস্তুতি চলছে।
পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহনেওয়াজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হওয়ার এঘটনার কারন বলা যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে চারটি বিশেষ তদন্তদল কাজ শুরু করেছে।