হোমনায় জমিজমার বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষ কে তুলে নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম ও পা ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ

0
19
মো. আবু রায়হান চৌধুরী
কুমিল্লার হোমনায় জমিজমা বিরোধের জের ধরে ভজন চন্দ্র দাস (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে রাস্তা থেকে বাড়িতে তুলে নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম ও পা ভেঙ্গে ফেলার অফিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনটি ঘটেছে গত সোমবার উপজেলার বাগমারা গ্রামে। এ ঘটনায় ভজন চন্দ্র দাসের ছেলে সুজন দাস (২৭) বাদী হয়ে আদালতে ৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান। আদালত তাদের মধ্যে মো. আলী মিয়া ও মো. এনায়েত মোল্লা নামের দু’ ব্যক্তির জামিন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে প্রেরন করেন। এবং বাকিদের জামিন মঞ্জুর করা হয়। সুজন চন্দ্র দাসের অভিযোগ, প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে সুজন চন্দ্র দাসের বাবা ভজন চন্দ্র দাস (৪৫) এর সাথে একই গ্রামের আলী মিয়া (৪০) এর জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই শত্রুতার জের ধরে ঘটনার দিন দুপুর দেড় টার দিকে ভজন চন্দ্র দাস পার্শ্ববর্তী উপজেলার জয়নগর গ্রামে তার আত্মীয় সুরেশ চন্দ্র দাস এর কাছ হতে ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে টাকা ধার নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে বাগমারা বাজারের পূর্বপার্শ্বের রাস্তায় এসে পৌছলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আলী মিয়া তার লোকজন নিয়ে অর্তকিতভাবে হামলা চালায় ও তাকে বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এবং বাড়িতে নিয়ে দেশিয় অস্ত্র লোহার রড, হকিস্ট্রিক ও লাঠিসোঠা ইত্যাদি দিয়ে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে ডান পা ভেঙ্গে ফেলে ও রক্তাক্ত জখম করে উঠনে ফেলে রাখেন। এসময় তার সাথে থাকা ৩ লক্ষ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। পরে তার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংঙ্খাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, মো. আলী মিয়া (৪০), মো. এনায়েত মোল্লা (৪০), আল-আমিন (২৫), সুজন মিয়া (২০), শাহিদা আক্তার (৩৫), মো. নুরুল ইসলাম (৫৫), মরিয়ম (১৮), খাদিজা (৩৫) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনকে আসামী করা হয়। আহত ভজন চন্দ্র দাস বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আলী মিয়ার সাথে আমার জমিজমা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা ও বিরোধ চলে আসছে। জমিজমার সকল প্রকার বৈধ কাগজপত্র আমার নামে। আমিই জমির প্রকৃত মালিক। আদালত থেকে বেশ কয়েকবার আমার পক্ষেই রায় এসেছে। তাদের নামে জায়গার দখল ছাড়তে আদালত হতে নোটিশও এসেছে। কিন্তু তারা কিছুতেই দখল ছাড়ছেন না। এই শত্রুতার জের ধরে ঘটনার দিন দুপুর দেড় টার দিকে আমি পার্শ্ববর্তী উপজেলার জয়নগর গ্রামের আমার বেয়াই এর কাছ থেকে আমার ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে টাকা ধার নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে বাগমারা বাজারের পূর্বপার্শ্বের রাস্তায় আমাকে একা পেয়ে আলী মিয়া ও তার লোকজন অর্তকিতভাবে আক্রমন করেন। এসময় তারা আমার হাত-পা ও মুখ বেধে বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এবং বাড়িতে নিয়ে দেশিয় অস্ত্র লোহার রড, হকিস্ট্রিক ও লাঠিসোঠা ইত্যাদি দিয়ে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে ডান পা ভেঙ্গে ফেলে ও রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আমার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় তারা। আমি প্রশাসনের কাছে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করি। এব্যাপারে অভিযুক্ত আলী মিয়ার সাথে একধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আলী মিয়ার স্ত্রী জোহরা আক্তার তাদের বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে বলেন, আমরা ভজনকে কিছুই করি নি, বরংচ ভজন মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় লোকজন নিয়ে বাড়িতে এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাকে এবং আমার মেয়েকে মারধর করে। আমার স্বামী ছুটাতে আসলে তাকে মাথায় ও বুকে আঘাত করেন। ভজন আমাদেরকে মারধর করে চলে যাবার সময় দরজা থেকে পা পিছলে পড়ে পা ভেঙ্গে ফেলেন। এখন আমাদেরকে ফাসানোর চেষ্ঠা করছেন। এ বিষয়ে হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। উভয় পক্ষই মামলা করেছেন। আদালত হতে উভয় পক্ষই জামিনে আছেন। মামলার তদন্ত চলছে।
Md Abu Rayhan

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here