August 17, 2020 মোঃতারেক ইসলাম সিয়াম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলে আবারো যমুনা, ধলেশ্বরী এবং ঝিনাই বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বংশাই এবং ফটিকজানী নদীর পানি কমছে। জেলায় এখনো ২টি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বন্যায় জেলায় এখন পর্যন্ত ৬ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে জেলার ত্রাণ শাখার তথ্য অনুয়ায়ী বর্তমানে পানিবন্দি কোন লোক সংখ্যা নেই। বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার হেক্টর ফসলী জমি নিমজ্জিত হয়েছে। জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রোববার (১৬ আগস্ট) সকালে ধলেশ্বরী নদীর পানি ৩ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৭ সে.মি. এবং ঝিনাই নদীর পানি ৩ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া যমুনা নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে বংশাই নদীর পানি ৩ সে.মি. কমে বিপদসীমার ৩৭ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র টিনিউজকে জানায়, জেলায় ১২টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলার নিমাঞ্চল এবং চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। বন্য কবলিত উপজেলাগুলো হলো- টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী, ধনবাড়ী, গোপালপুর, বাসাইল, মির্জাপুর, সখীপুর এবং ঘাটাইল। এ ১১ উপজেলার ৯৫টি ইউনিয়নের অন্তত ৮৪৯ টি গ্রাম প্লাবিত হয়। অপরদিকে ৬টি পৌরসভার আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়। বন্যায় ৬ লাখ ১৩ হাজার ২২৭ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় কোন পরিবারের বা লোক সংখ্যা নেই। অপরদিকে ৭৯২টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং আরো আংশিক ৩৫ হাজার ৯৮৯টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ২টি স্কুল নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আংশিক আরো ৩১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, এছাড়া নদী ভাঙনে ১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক ২৩০ টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ১১ উপজেলার ৮০৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়। জেলায় এখন পর্যন্ত ১৩ কি.মি. সম্পূর্ণ কাঁচা রাস্তা এবং আংশিক ৭৯৫ কি.মি. কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে সম্পূর্ণ ১ কি.মি. পাকা রাস্তা এবং ১৮৬ কি.মি. আংশিক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও সম্পূর্ণ ২৬টি ব্রিজ এবং আংশিক ১৭৮টি ব্রিজ ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ১.৮ কি.মি. এবং ১৩ কি.মি. আংশিক নদীর বাঁধ ক্ষতি হয়। অন্যদিকে ৯৫৩৭টি টিউওবেল ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ২টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এই আশ্রয় কেন্দ্রের লোক সংখ্যা ১৩৮জন। ১১৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে এখন পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে শিশুসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় বন্যায় ১৮ হাজার ১২৬ হেক্টর ফসলী জমি নিমজ্জিত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ১৯৮ হেক্টরের উপরে ফসলী জমি নিমজ্জিত নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন, রোপা আমন (বীজতলা), আউশ, সবজি, লেবু এবং আখ রয়েছে। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, কিছু কিছু নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, আবার কিছু কিছু নদীর পানি কমছে। পানি সরে গেলে নদী ভাঙন তীব্র হবে।