তাপস কর,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।
সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বামীকে না পেয়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারপিট করেছে এক নারী সুদখোর ও তার মেয়ে। মারধরে আহত আকলিমা আক্তার (৩০) কে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নারী সুদখোরসহ দুজনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও দুই দিনেও পুলিশ অভিযোগ আমলে নেয়নি। এ ঘটনা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলার মৃগালি গ্রামে। খবর পেয়ে আজ বহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আকলিমা আক্তার বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। পাশে বসে রয়েছেন তার স্বামী মানিক মিয়া। তিনি জানান, জরুরি টাকার প্রয়োজনে প্রায় আট মাস আগে উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের মৃগালি গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী তাহেরা বেগম (৫৫) এর কাছ থেকে প্রতিমাসে আড়াই হাজার টাকা সুদে ৫০ হাজার টাকা নেন। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহ আগে সুদে আসলে সকল টাকা পরিশোধ করে দেন। কিন্তু ওই নারী আরো এক মাসের অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। তার এই দাবি অযৌক্তিক বললে তাহেরা বেগম অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে দেখে নেওয়ার কথা বলে চলে যায়। তিনি আরো জানান, এর মধ্যে গত মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাহেরা তার স্বামীকে নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে তিন হাজার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। সম্মানের কথা চিন্তা করে টাকা দিতে রাজি হয়ে কিছুদিন সময় দেওয়ার জন্য বললে তাহেরা বেগমরে মেয়ে মোসা. সিজ্জিলিন ওরফে কালার মা কয়েকজনকে নিয়ে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে টেনেহিঁচড়ে জোরপূর্বক তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানের রোল দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিহ্নিত সুদখোর তাহেরা বেগমের সুদের টাকা দিতে না পারায় গত ২৬ মে মহেষপুর গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে হারুন মিয়া আত্মহত্যা করে। এমনকি মৃগালি গ্রামের ছমক আলীর ছেলে রশিদ আলীকে সুদের টাকার জন্য নির্যাতন করলে তিনিও আহত অবস্থায় মারা যান। দুটি ঘটনারই থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো কাজে আসেনি বলে দাবি করেন মানিক মিয়া। ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই ও অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি তদন্ত করে দেখেছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে বেধড়ক মার নয় ছোট কঞ্চি দিয়ে কয়েকটা আঘাত করেছে। তারপরও বাদী চাইলে মামলা রেকর্ড হবে।