কাপাসিয়ায় করোনা কালীন সময়ে মাতৃমৃত্যু হার শুন্য এটা দাইগনের প্রশিক্ষণের সুফল সিমিন হোসেন রিমি

0
40

এমপি কাপাসিয়া প্রতিনিধি

ডাক্তাররা হল আমার স্বপ্নের সারথি তার সঙ্গে করোনা চলাকালীন সময়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দাইগন যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে কাপাসিয়ায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর হার শূন্য তারই প্রমান। করোনা চলাকালীন শুরুতে দাইগনের যে প্রশিক্ষণ আমরা দিয়েছিলাম এটা তারই সুফল। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভায় আধুনিক তথ্য প্রযোক্তির মাধ্যমে যুক্ত থেকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি কাপাসিয়ার সকল প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের প্রচার প্রচারণায় আমাদের এই সেবা শতভাগ সফলতা পেয়েছে এবং দেশব্যপি এই কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা চলছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে হাসপাতালের বিভিন্ন সেবার অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সালাম সরকার ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম। স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও কাপাসয়িা উপজলো পরষিদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ আমানত হোসেন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ ইসমত আরা, ডাঃ আবু হাসান মোস্থফা। উপস্থিত ছিলেন ব্যাবস্থা কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকন, কড়িহাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম মোড়ল, নার্সিং সুপারভাইজার জাকিয়া জেসমিন, বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ প্রমুখ। উল্লেখ্য,দেশে প্রথম বারের মতো মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবায় ২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমদের সহধর্মীনি সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিনের নামে একটি স্বাস্থ্য সেবা পাইলট প্রকল্পের চালো করেন। তারই কন্যা কাপাসিয়ার সংসদ সিমিন হোসেন রিমি। এর মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু মুক্ত কাপাসিয়া মডেল এর যাত্রা শুরু হয়। উদ্ভাবিত ’গর্ভবতীর আয়না’ (মা ও শিশু স্বাস্থ্য সফট্ওয়্যার) এবং ’গর্ভবতীর গয়না’ (মা ও শিশু স্বাস্থ্য সহায়িকা) গর্ভবতী মায়ের ৩৭টি তথ্য সংবলিত ডাটা বেইজ তৈরী করা হয়। প্রত্যেক গর্ভবতী মা’কে আলাদা আই ডি সহ মা ও শিশু স্বাস্থ্য সহায়িকা প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে গর্ভবতী মা কমপক্ষে ৪ বার প্রসবপূর্ব সেবা সম্পর্কে অবহিত হন। কোথায়, কখন এবং কোন ব্যক্তির কাছে এই সেবা পাওয়া যাবে তার অফিসিয়াল ফোন নম্বরসহ বর্ননা রয়েছে সহায়িকাটিতে। গর্ভকালীন চেক-আপের নির্দিষ্ট তারিখের ৩ দিন পূর্বে সফট্ওয়্যার থেকে গর্ভবতী মায়ের মোবাইল ফোনে সেবা গ্রহনের স্থান, সেবা প্রদানকারী ব্যক্তির নাম ও ফোন নাম্বরসহ বাংলায় এস এম এস ও ভয়েস কল দেয়া হয়। সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির আন্তরিকতা, নিবিড় সম্পৃক্ততা, উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও মাঠ পর্যায়ে সেবা প্রদানকারীদের মাঝে সমন্বয় এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কারনে গত চার বছরে কাপাসিয়ায় প্রসবকালীন জটিলতায় মাতৃমৃত্যুর হার শুন্যের কোটায় নেমে আসে। করোনা পরিস্থিতে এই সেবা কার্যক্রমে ছন্দ পতনের আশংকা দেখা দেয়। বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে সিমিন হোসেন রিমিকে। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চত করতে যুগোপযোগী ও ব্যতিক্রমধর্মী এক উদ্যোগ নেন তিনি। কাপাসিয়া উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাই দ্বারা নিরাপদ প্রসবসেবা নিশ্চিত করতে ৬ দিন ব্যাপি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক দাইগণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ নেন তিনি। উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমন্বয়ক উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম জানান, ”সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে গত ১১ জুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সভাকক্ষে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে শেষ হয় ১৭ জুন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন করেন সিমিন হোসেন রিমি, এম পি। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ১৮ জন করে মোট ১৯৮ জন দাই এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করেন”। প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সালাম সরকার ও গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ নুসরাত জাহান খান। প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলাকালে প্রতিদিন সিমিন হোসেন রিমি, এম পি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। প্রশিক্ষণের প্রতিটি সেশনে তিনি প্রশিক্ষণার্থী দাইগণের সাথে কথা বলেন। প্রসবপূর্ব, প্রসবকালীন ও প্রসবপরবর্তী মা ও নবজাতকের জটিলতা ও কুসংস্কার বিষয়ে তিনি তাদেরকে সচেতন করেন। জ্ঞানের অভাবে অথবা অবহেলার কারনে কোন মা ও নবজাতকের জীবন যাতে বিপন্ন তয় না হয় তা নিশ্চিত করতে সকলকে অত্যন্ত সতর্ক ও দায়িত্ববান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রসূতি মা ও নবজাতকের যে কোন জটিলতার ক্ষেত্রে বিলম্ব না করে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে ‘রেফার’ করার বিষয়ে তিনি গুরুত্ব দেন। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেককে ‘ডেলিভারি কিট’ ও ‘প্রসব সহায়তাকারীর টুলবক্স’ প্রদান করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here