August 26,2020 মোঃতারেক ইসলাম সিয়াম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একই গ্রামের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই বান্ধবীর বাল্যবিবাহ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা এ নোটিশ দেন। কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান আজ দুপুরে নোটিশ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকেও অনুরুপ নোটিশ দেবেন বলে জানান তিনি। কীভাবে একই গ্রামে দুটি বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠিত হলো তার জবাব দিতে ওই চেয়ারম্যানকে তিন কার্যদিবস সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের সূত্রে জানায়, ওই দুই ছাত্রীর বাড়ি উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের বিন্নরীপাড়া গ্রামে। তারা স্থানীয় বড়চওনা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং বান্ধবী। গত ১৫ আগস্ট ও ২৩ আগস্ট বিয়ে দুটি অনুষ্ঠিত হয়। পাশের উপজেলা ভালুকা উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার (কাজি) নুরুজ্জামান এ দুটি বিয়ের নিবন্ধন (কাবিন) করেন। তবে মুঠোফোনে কাজি নুরুজ্জামান এ দুটি বিয়ে নিবন্ধন করেননি বলে দাবি করেন। এলাকাবাসী জানান, গত ১৫ আগস্ট শনিবার রাতে উপজেলার বিন্নরীপাড়া গ্রামের হালিম মিয়ার মেয়ে হালিমা আক্তারের (১৪) সঙ্গে নামদারপুর সুলতান নগর গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে আজাহার উদ্দিনের ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়েটি সম্পন্ন হয়। ঠিক এর সাতদিনের মাথায় ২৩ আগস্ট রাতে একই এলাকার মানিক মিয়ার মেয়ে মুক্তা আক্তারের (১৪) সঙ্গে ৪ লাখ ৫০ হাজার দেনমোহরে ভালুকা উপজেলার কৈয়াদি গ্রামের এক প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে হয়। কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মজিবর রহমান ফকির ওই দুটি বাল্যবিয়ে অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তবে গতকাল সোমবার তিনি খোঁজ নিয়ে বিয়ে দুটির বিষয়ে সত্যতা খুঁজে পান। প্রশাসনের কঠোরতার কারণে বিয়ে দুটি গোপনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি জানতে পারেন। বড়চওনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ লাল মিয়া জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বিয়ে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, ‘বাল্যবিবাহ কখনো ঘটা করে হয় না, গোপনেই হয়। কেউ মেয়েকে গোপনে বিয়ে দিলে সে দায়তো আমার না। তবে আমিও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেব’। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, ওই দুটি বিয়ে কীভাবে হলো তাঁর ব্যাখা চেয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ওই কাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভালুকার ইউএনওকে অবগত করা হয়েছে।